কোরবানির পশুর নির্বাচন করার নিয়ম ও গুরুত্বপূর্ণ দিকসমূহ পরামর্শ সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

 

কোরবানির পশুর নির্বাচন করার নিয়ম সম্পর্কে অনেকেই জানেন না আজকে আমি আপনাদের মাঝে কোরবানির পশু নির্বাচন করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। যাতে করে আপনারা কোরবানির পশু নির্বাচন করা নিয়ে কোন সমস্যা না হয়।

কোরবানির-পশু-নির্বাচন-করার-নিয়মকুরবানী পশুর স্বাস্থ্য  বয়স,শরীরের অবস্থা এবং শরীয়তের দৃষ্টিতে সঠিক পশু নির্বাচন করার উপায় সম্পর্কে এই পোস্টে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হবে।কুরবানীর পশু নির্বাচন করবেন কিভাবে সে সমন্ধে অবগত নন এ পোস্টটি শুধু তাদের জন্য ।

পেজ সূচিপত্রঃ কোরবানি পশু নির্বাচন করার নিয়ম

কুরবানীর পশু নির্বাচন করার নিয়ম

কোরবানি শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মুসলমানদের জন্য ইবাদত। এই ইবাদতের সঠিক আদায়ের জন্য কুরবানীর পশুর নির্বাচন করার নিয়ম জানা আমাদের সকলেরই অপরিহার্য। ভুল পশুর নির্বাচন করলে কুরবানী শহীদ হবে না, হলে ইবাদত অগ্রহণযোগ্য হতে পারে।

অনেকেই শুধুমাত্র পশুর আকার বা দাম দেখে নির্বাচন করেন ,অথচ শরীয়ত সম্মত দিকটি উপেক্ষিত হয়। একটি সঠিক পশু নির্বাচন ইবাদতের প্রতি আমাদের আন্তরিকতা ও আল্লাহ সন্তুষ্টি অর্জনের ইচ্ছা প্রকাশ করে। তাই আমাদের উচিত শরীয়ত সম্মত দিক বিবেচনা করে কুরবানী পশু নির্বাচন করার চেষ্টা করা।

শরীয়ত অনুযায়ী কুরবানী পশুর নির্বাচনে নিয়োগ

ইসলাম অনুযায়ী কোরবানির জন্য গরু, ছাগল ভেড়া মহিষ এবং উট ব্যবহারযোগ্য। তবে প্রতিটি পশুর একটি নির্দিষ্ট বয়স ও শরীয়ত মানদন্ড আছে যা পূরণ না করলে তা কোরবানিযোগ্য হয় না। যেমন গরু বা মহিষ কমপক্ষে দুই বছরের এবং ছাগল বা ভেড়া কমপক্ষে এক বছরের হতে হবে।

কোন পশুর একটি চোখ অন্ধ শিংভাঙ্গা বা পা ভাঙ্গা, বা নেচ কাটা ইত্যাদি যেকোনো একটি যদি খোদ থাকে তাহলে সেই পশু কোরবানি উপযোগী নয়। আমাদের সব সময় এই নিয়ম গুলো মেনে পশু নির্বাচন করলে কেবল কোরবানি গ্রহণযোগ্য হবে। সবচেয়ে আপনার যে পশুটি পছন্দনীয় সেটি দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে।

কোরবানির পশুর বয়স নির্ধারণ করার পদ্ধতি

বয়স যাচাই করা কোরবানির পশু নির্বাচন করার নিয়ম একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। গরুর ক্ষেত্রে দাঁত দেখে সহজে বয়স নির্ধারণ করা যায়। সাধারণত দুইটি দুধের দাঁত পড়ে স্থায়ী দাঁত উঠলেই বোঝা যায় পশুটি দুই বছর পূর্ণ হয়েছে। যেসব লোকেরা গরু লালন-পালন করে বা কোন পশু বিক্রেতার সাহায্য নিয়ে দাঁত পরীক্ষা করা ভালো।

 কারণ অনেক সময় বিক্রেতারা বেশি দামে বিক্রয় করতে কম বয়সী পশুকে বড় দেখিয়ে দিতে পারে। এমনকি ইদানিং পশু বিক্রেতা অর্থাৎ আমরা যাদেরকে গরুর দালাল বলে থাকি তারা মূলত ছোট গরু দাঁত ভেঙ্গে বাজারে নিয়ে যে বিক্রি করার চেষ্টা করে সেই দিকেও আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। সবচেয়ে  ভালো।

পশুর শারীরিক অবস্থা দেখে কুরবানীর পশুর নির্বাচন করার নিয়ম

শরীয়ত অনুযায়ী পশুর শরীর হতে হবে সুস্থ ও পরিপূর্ণ।, অতিরিক্ত রোগাক্রান্ত খুব দুর্বল বা অপুষ্ট পশু কোরবানির জন্য উপযুক্ত নয়। পশুর চলাফেরা স্বাভাবিক কিনা চোখে বা শরীরে কোন অসঙ্গতি আছে কিনা তা খেয়াল রাখা জরুরী। চর্মরোগ বা পোকা আক্রান্ত পশু অনেক সময় বাইরে থেকে বোঝা যায় না।

পশু যদি চঞ্চলও খেতে আগ্রহী হয় তবে সেটি সাধারণত সুস্থ থাকে। নিজে যদি বুঝতে না পারেন তাহলে যেসব লোকেরা গরু ছাগল লালন পালন করে তাদের সহযোগিতা নিতে পারেন। তারা গরু দেখেই বলে দিতে পারবে গরুটি সুস্থ কিনা। এটি হল গ্রামের জন্য আর আপনি যদি শহরে বসবাস করেন তাহলে কোন একজন পশুর ডাক্তারকে দেখিয়ে নিশ্চিত হতে পারেন।

কোন কোন পশু কোরবানির জন্য উপযুক্ত নয়

যেসব পশুর একটি বা একাধিক অঙ্গ অকার্যকর বা বিকল, সেগুলো শরীয়ত অনুযায়ী কুরবানীযোগ্য নয়। যেমন এক চোখ অন্ধ, এক পা অচল কানে বা শিংগের গুরুতর আঘাতপ্রাপ এসব পশু বর্জন করতে হবে। এছাড়াও খুব বেশি রোগা বস্তু বা দুর্বল পশুও কুরবানীর জন্য গ্রহণযোগ্য নয়। 

কারণ এমন পশু আল্লাহর পথে উৎসর্গ যোগ্য নয় বলে বিবেচিত হয়। তাই পশু নির্বাচন করার সময় এসব বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে। আমাদের উচিত আমরা যে কুরবানী পশু নির্বাচন করব সেটি যেন মন পছন্দ হয়। সুস্থ সবল দেখতে সুন্দর এমন পশই নির্বাচন করব। সবচেয়ে ভালো হয়।

আমরা যদি পশুটি নিজে লালন পালন করে থাকি তাহলে তার প্রতি একটি মায়া জন্মে আর এই মায়া জন্মানোর জন্য পশুটি আল্লাহর রাস্তায় কুরবানী করতে আমাদের মনে কষ্ট হয়। তারপরেও আমরা আল্লাহকে রাজি খুশি করার জন্য নিজের পছন্দের পশুটি কোরবানি দিয়ে থাকি। এভাবে যদি আমরা কোরবানি নির্বাচন করতে পারি তাহলেই আমাদের উপযুক্ত কোরবানির পশু বলে বিবেচিত হবে।

চোখ ও দাঁত দেখে কুরবানীর পশু নির্বাচন করার নিয়ম

চোখ দেখে পশুর দৃষ্টিশক্তি ঠিক আছে কিনা যাচাই করা দরকার। দুটি চোখে যদি সমান ভাবে গরু ছাগল ভেড়া এবং কোন প্রশ্নটি কোরবানির জন্য বেছে নিবেন

 পশু দেখতে না পারে, তবে তা কোরবানির জন্য উপযুক্ত নয়। চোখের কোন দাগ বা অতিরিক্ত পানি থাকলে চিকিৎসা নেওয়া দরকার। দাঁতের ক্ষেত্রে, বয়স নির্ধারণ ছাড়াও মুখের স্বাস্থ্য ভালো আছে কিনা।

দুধের দাঁত পড়ে স্থায়ী দাঁত উঠেছে কিনা তা দেখা জরুরী। কারণ অনেক সময় দুধের দাঁত থাকলেও পশুকে বড় দেখানোর চেষ্টা করা হয়। সেদিকে ভালোভাবে নজর রাখতে হবে।

গরু,ছাগল,ভেড়া এবং উট কোন পশুটি কোরবানির জন্য বেছে নিবেন

গরু ছাগল ভেড়া এবং উট কোন পশুটি আপনি বেছে নিবেন সেটা নির্ভর করবে আপনার আর্থিক সামর্থ্য ও ইচ্ছার উপর। গরুর সাধারণত বেশি জনপ্রিয় কুরবানী পশু, কারণে একটি গরু সাতজন পর্যন্ত শরীর হয়ে কোরবানি দিতে পারে। ছাগল ভেড়া একজনের জন্যই উপযুক্ত। অনেক মূল্যবান পশু হিসেবে ধরা হয়। 

তবে উট নির্বাচন করার সময় বিশেষভাবে অভিজ্ঞ কাউকে সাথে নিতে হবে, কারণ এটি আমাদের বাংলাদেশের মতো দেশে দালতু পালিত হয় না এটা বাইরের দেশ থেকে নিয়ে আসতে হয়। তাই মোট সম্বন্ধে আমাদের দেশের লোকজন খুব একটা ভালো ধারণা দিতে পারবেন।
পেশাদার পশু ডাক্তার দিয়ে পশু পরীক্ষা করানো দরকার
সম্ভব হলে পেশাদার কোন পশু ডাক্তার দিয়ে পশু কেনার সময় পরীক্ষা করানো খুবই ভালো। অনেক রোগ বা ত্রুটি সাধারণত চোখে ধরা পড়ে না, কিন্তু বিশেষজ্ঞরা সহজে তা ধরতে পারে বা চিনতে পারে। বিশেষ করে যদি দামি পশু কিনতে চান বা বড় গরু, কিনতে চান তাহলে আগে থেকেই পশুর স্বাস্থ্য নিশ্চিত করা দরকার।

এতে করে কুরবানী যেমন শহীদ হবে তেমনি ওষুধ নিয়ে বাড়তি সমস্যা পড়ার ঝুঁকিও কমবে। আবার যদি কোন ক্রয় করে থাকেন। অনেকে টাকার জন্য অন্তঃসত্ত্বা গাভী বা বপন গরু বিক্রয় করে । এবং তারা বলে যে গরু খেয়ে দেয়ে অনেক মোটাতাজার জন্য এমন দেখাচ্ছে। তার কথার উপরে বিশ্বাস করে যখন কোন ব্যক্তি গাভী বা বা কোন গরু ক্রয় করে কোরবানি দেয় দেখা যায় অনেক সময় দুই মাস তিন মাসে পেটের মধ্যে বাছুর পাওয়া  যায়। 

এতে করে একটি নিষ্পাপ গরুর বাচ্চা কি হত্যা করা হয়। এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে গায়ে গরু বা বকুল গরু কিনার পরে অভিজ্ঞ কোন ডাক্তার দিয়ে অবশ্যই চেকআপ করানো দর কার। নিশ্চিত হওয়ার জন্য গরুটি স্বাস্থ্যবান নাকি অন্তঃসত্ত্ব এ বিষয়টা সকলের মাথায় রাখা উচিত।

কোরবানির গরু ভাগ করার নিয়ম 

আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে সর্বাধিক প্রিয় বস্তু উৎসর্গ করাই কোরবান। ও শুক্রবার এর পরে অন্তর পরিচিত নয়। আর এটাই হলো কুরবানীর মূল উদ্দেশ্য। কোরবানির মাংস সঠিকভাবে ভাগ করার জন্য যে সকল নিয়মগুলো অনুসরণ করা দরকার তা নিম্নে আলোচনা করা হলো। 
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাযিয়াল্লাহু তা'আলা থেকে বর্ণিত তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, এক ভাগ গরিব-প্রতিবেশীদের দিতে এবং একভাগ গরিব মিসকিনদেরকে দিতেন‌।
হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু সাল্লাম থেকে বর্ণিত আছে রাসূলে করী (সা:) আমাকে তার কোরবানির পশু জবাই করতেন অসুর গোশত চামড়া ও নারী-ভুরি সদকা করতে নির্দেশ দিয়েছেন।‌ আর এগুলো কোন কিছুই কসাইকে দিতে নিষেধ করেঔ নাছেন। বুখারী ১৭১৭ এবং মুসলিম ১৩ ১৭।

উপসংহার /কোরবানির পশু নির্বাচন করার নিয়ম

আমরা এই পোস্টটি এতক্ষণ কোরবানির পশু নির্বাচন করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা থেকে এটা জানতে পারলাম যে কোরবানি পশু কিভাবে নির্বাচন করতে হয় কোন কোন বিষয়গুলোর প্রতি নজর রাখতে হয়। শরীয়ত অনুযায়ী কোরবানির পশু নির্বাচন করব কিভাবে কোরবানির পশুর বয়স নির্ধারণ করতে হয় ।

চোখ ও দাঁত দেখে কুরবানির পশু নির্বাচন করতে হবে কিভাবে বিভিন্ন বিষয়।উক্ত আলোচনা থেকে আশা করি কোরবানির সম্বন্ধে তথ্য পেয়েছেন। আমার এই ব্লকে বিভিন্ন ধরনের পোস্ট করা হয় নিয়মিত পোস্টটি পড়লে বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে পারবেন আপনাদের সুস্থতা কামনা করে আজ এখানে শেষ করছি।



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

www.alltipsatoz.comনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url